কলা খাওয়ার পর তার খোসাটিকে যেখানে সেখানে ফেলবে না। অসাবধানে কেউ পা পিছলে পড়ে যেতে পারে। ছোটোবেলায় এই উপদেশ মায়েরা সবসময় দিতেন। একথা আমরা আজও মেনে চলি। কলার খোসা যেখানে সেখানে ফেলি না। নির্দিষ্ট ডাস্টবিনেই ফেলি।
কিন্তু ডাস্টবিনে ফেলে না দিয়ে কাঁচাকলা খোসা যদি রেখে দেওয়া যায় তাহলে সেটি দিয়ে বেশ কয়েকটি জিভে জল আনা পদ রান্না করে নেওয়া যায়। তা সে কাঁচা কলা হোক বা পাকা। বিশ্বাস হচ্ছে না। তাহলে রেসিপি জেনে নেওয়া যাক।
কাঁচকলার খোসা বাটাকাঁচকলা খোসা পরিষ্কার করে ধুয়ে নুন জলে ভাপিয়ে নিন। খুব ভালো করে জল ঝরিয়ে নিন। এবার সাদা সর্ষে, রসুন এবং কাঁচালঙ্কা সহ কলার খোসা মিকিসতে মিহি করে বেটে নিন। কড়াইতে অল্প সর্ষের তেল গরম করে তাতে শুকনোলঙ্কা, তেজপাতা এবং কালোজিরে ফোঁড়ন দিন। তাতে দিন হলুদগুঁড়ো। এবার খোসাবাটা এর মধ্যে দিয়ে ভালো করে ভাজতে থাকুন। স্বাদ অনুযায়ী নুন এবং অল্প চিনি দিন। খুব ভালো করে গোটা জিনিসটি মেশান। গরম গরম ভাতের সঙ্গে খেয়ে দেখবেন। যেমন সুস্বাদু তেমনই পুষ্টিকর। মুখে অরুচি দূর করতেও এর জুড়ি মেলা ভার।
কাঁচকলার খোসার বড়া
কাঁচকলার কোসা ধুয়ে সিদ্ধ করে মিক্সিতে পেস্ট করে নিন। মুসুরির ডাল বেটে রাখুন। এবার একটি পাত্রে শুকনোলঙ্কা পোড়া হাত দিয়ে গুঁড়ো করে নিন। তাতে দিন পেঁয়াজ কুচি, কাঁচা লঙ্কা কুচি, জিরেগুড়ো, নুন, হলুদ, আদা রসুন বাটা। ভালো করে হাত দিয়ে মেখে নিন। এতে কাঁচকলার খোসা বাটা এবং ডাল বাটা দিয়ে আবার ভালো করে মেশান। ভালোমতো ময়ান হয়ে গেলে বড়ার আকারে গড়ে তুলুন। ডুবো তেলে ভাজুন। বিকেলে চায়ের সঙ্গে টা হিসেবে জমে যাবে।পাকা কলার খোসা ছাড়িয়ে ভালো করে ধুয়ে ছোটো ছোটো টুকরো করে নিন। তাতে অল্প ময়দা মিশিয়ে হাত দিয়ে মাখুন। তাতে মেশান অল্প সাদা তেল, মাখন, দুধ, আমন্ডকুচি, ভ্যানিলা এক্সট্র্যাক্ট এবং নুন। খুব ভালো করে ব্যাটার তৈরি করুন। ব্যাটারটি গাঢ় হবে। এতে মেশান চিনি, কোকো পাউডার এবং বেকিং পাউডার। ফের ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এবার পাত্রে সাদা তেল মাখিয়ে ব্যাটারটি ঢেলে দিন। বেক করতে ওভেনে বসান। অনেকটা কেকের মতো করে পদ্ধতিটি মেনে চলতে হবে। ৫০ থেকে ৫৫ মিনিট এটিকে বেক করতে হবে। টুথ পিক দিয়ে দেখে নেবেন যে ব্যাটার তার গায়ে লাগছে কিনা। ঠিক যেমন করে কেক তৈরির সময় পরীক্ষা করা হয়। টুথপিক পরিষ্কার থাকলে বুঝবেন কলার খোসার রুটি বা কেকটি তৈরি হয়ে গেছে। ঠান্ডা করে সার্ভ করুন। চাইলে ওপরে মধু ছড়িয়ে দিতে পারে। এই কেক চার দিন পর্যন্ত রেখে দেওয়া দেওয়া যায়। ব্রিটেনে এই কেক বা রুটিটি বেশ জনপ্রিয়।কলার খোসা ভাজা
কাঁচাকলার খোসা ভাজা যেমন সুস্বাদু তেমনই রান্না করা সহজ। কলার খোসা আলুভাজার মতো করে লম্বালম্বি কেটে নিন। বেশকিছুক্ষণ জলে ভিজিয়ে রাখুন। এতে খোসার কস বেরিয়ে যাবে। তিতকুটে ভাবটাও চলে যাবে। এবার পাত্রে জল দিয়ে খোসা অল্প ভাপিয়ে নিন। খেয়াল রাখবেন যেন গলে না যায়। জল ঝরিয়ে খোসা সিদ্ধগুলি ঠান্ড করে নিন। এবার এতে নুন, হলুদ, অল্প চিনি, লঙ্কার গুঁড়ো ভালো করে মাখিয়ে ম্যারিনেট করে রাখন। মিনিট পনেরো পর ছাঁকা তেলে কলার খোসা ভেজে নিন। ডাল দিয়ে কলার খোসা ভাজা খেতে বেশ ভালো লাগে। রুটি কিংবা পরোটার সঙ্গে কলার খোসা ভাজা বেশ সুস্বাদু।
No comments