শীত আর রুক্ষতা হাত ধরাধরি করে চলে। তাই এই সময়ে বিশেষ যত্নআত্তি একান্ত প্রয়োজনীয়, তা না হলেই ত্বক আর্দ্রতা হারাতে আরম্ভ করবে এবং সেই সঙ্গে বাড়বে সময়ের আগেই বলিরেখা পড়ার আশঙ্কা। বিশেষ করে যাঁদের দিনের বেশিরভাগটাই শীতাতপনিয়ন্ত্রিত অফিসে কাটে, তাঁদের ত্বক নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে সামান্য কারণেই। তাই সময় থাকতেই সাবধান হওয়া উচিত। শীতের দিনে সাবান যতটা সম্ভব কম ব্যবহার করতে পারলে ভালো হয়। ফেস ওয়াশ বা সাবানের মান যতই ভালো হোক না কেন, তার মধ্যে ক্ষার তো থাকবেই। আর ক্ষার ত্বকের আর্দ্রতা কেড়ে নেয় খুব তাড়াতাড়ি। জানেন কি, স্কিনের পিএইচ ব্যালান্স ঠিক রেখে তার যত্ন নিতে পারে নানা ঘরোয়া উপাদান। তেমন কয়েকটি ফেস প্যাক ট্রাই করে দেখুন স্নানের সময়, ফারাকটা স্পষ্ট বুঝতে পারবেন।
দুধের সর আর মধু: সাবানের পরিবর্তে ঠাকুমা-দিদিমাদের প্রাচীন রূপটানে আস্থা রাখুন। দুধের সর আর মধুর মিশ্রণে যদি কমলালেবুর খোসা শুকনো করে গুঁড়িয়ে নিয়ে মেশাতে পারেন, তা হলে স্ক্রাবার হিসেবেও তা চমৎকার কাজে দেবে। এর মধ্যে মেশানো যায় কাঁচা হলুদবাটা বা মুসুরির ডালবাটাও। স্নানের আগে পুরো শরীরে মেখে নিয়ে মিনিট দশেক অপেক্ষা করুন, তার পর রগড়ে ধুয়ে নিলেই ত্বক ঝলমলে হয়ে উঠবে।
দুধ, ময়দা, মধু: মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চরাইজ়ার হিসেবে অসাধারণ। দুধের ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বককে পরিষ্কার করে সুকোমলভাবে। ময়দার প্রলেপ ত্বকের উপর থেকে মৃত কোষ সরিয়ে ফেলে, ফলে আপনার দীপ্তি চোখে পড়ে পরিষ্কারভাবে।
অ্যালো ভেরা আর অলিভ অয়েলের প্যাক: সারা রাত মুখে ও গলায় লাগিয়ে রাখার জন্য এই প্যাকটি অসাধারণ। এক চাচামচ পরিমাণ অ্যালো ভেরা জেল নিন, তার সঙ্গে মেশান সমপরিমাণ অলিভ অয়েল। আপনার হাতের তালুতে দুটো ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে মুখে ও গলায় লাগিয়ে রেখে দিন সারা রাত। পরদিন সকালে হালকা গরমজলে মুখ ধুয়ে পছন্দের ময়েশ্চরাইজ়ার লাগিয়ে নিন।
ডিমের কুসুম আর মধু: ডিমের কুসুমে যে প্রোটিন আর ফ্যাট থাকে, তা ত্বককে পুষ্টি ও আর্দ্রতা জোগায়। সেই সঙ্গে মধুর ময়েশ্চরাইজ়িং এফেক্ট তো আছেই। একটি ডিমের কুসুম ও এক চাচামচ মধু মিশিয়ে মুখে ও গলায় লাগিয়ে নিন। মিনিট কুড়ি পর ধুয়ে নিতে হবে। তবে এই প্যাকে কিন্তু একটা তীব্র আঁশটে গন্ধ হয়, সেটুকুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।
অলিভ/ নারকেলের তেল আর মধু: ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের জুড়ি নেই। আপনার যেটি পছন্দ, সেটি বেছে নিন। সঙ্গে আধ চাচামচ মধু মেশান। তার পর ভালো করে মিশিয়ে মুখে, গলায় মেখে সারা রাত রেখে দিন। তেল আর্দ্রতা ও স্থিতিস্থাপকতা জোগাবে, মধু অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করবে ও ব্রণ বা র্যাশের সমস্যা দূর করবে। পরদিন সকালে সামান্য গরমজলে মুখ ধুয়ে আপনার প্রিয় ময়েশ্চরাইজ়ার লাগিয়ে নিন।
No comments