পুলিশ জেলা প্রশাসক নম্রতা পাতিল জানিয়েছেন যেজ যোগেশ নামে এক ব্যক্তি ভুয়ো সেনা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বহু মহিলা এবং তাদের আত্মীয়দের সাথে প্রতারণা করেছেন। যোগেশ গাইকওয়াদকে গত মাসের ২১ তারিখ পুনের বিবেউওয়াদির বাসিন্দা ২২ বছর বয়সী এক মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, অভিযোগ দায়ের করা মহিলাটি বলেছেন, "গত বছরের জানুয়ারিতে আমার মা অসুস্থ ছিলেন এবং তাকে দেখার জন্য ঘন ঘন বিবিওওয়াদির একটি হাসপাতালে আসতেন।এর আগে যখন আমার মা এবং আমি বাস স্টপে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম, তখন যোগেশ সেনা ইউনিফর্ম পরে সেখানে এসেছিলেন। সেই সময়ে তার আইডি কার্ডটি রাস্তায় পড়েছিল, যা আমি তুলে এনে দিয়েছিলাম। এই সময়ে আমদের মধ্যে প্রথম কথোপকথন হয়েছিল।
মহিলাটি বলেছিল, 'বাস স্টপে দেখা হওয়ার কয়েক দিন পরে, যোগেশ আমাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলেন এবং তারপরে আমাদের কথোপকথন শুরু হয়। একদিন তিনি আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং তারপরেই আমরা অ্যালান্দিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই, কিন্তু তিনি আমাকে কখনও তার বাড়িতে নিয়ে যাননি। ' মহিলাটি বলেন, 'আমার ভাইকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে তিনি ২ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। একইভাবে, তিনি আমার ভাইয়ের ১০ থেকে ১৫ বন্ধুদের কাছ থেকেও টাকা নিয়েছিলেন।
সিনিয়র ইন্সপেক্টর সুনীল জাভরে বলেন, “তদন্ত, যোগেশ গাইকওয়াদের চারটি বিবাহের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। তাদের মধ্যে দু'জন মহিলা পুনে শহর, একজন অমরাবতী ও একজন আওরঙ্গাবাদ -এ আছেন। যোগেশ আলন্ডির ধর্মশালায় দুটি বিবাহ করেছিলেন এবং মন্দিরে আরও দুটি বিবাহ করেছিলেন, কিন্তু কোনও বিয়েই আইনি নিবন্ধভুক্ত হয়নি। তিনি বলেন, 'আমাদের প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে যে, যোগেশের ৫৩ জন মহিলার সাথে সম্পর্ক ছিল।'
এসপি সুনীল জাভরে বলেন, 'যোগেশ যখনই মহিলাদের সাথে দেখা করতেন, তিনি সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরে থাকতেন এবং নিজেকে কর্নেল রাম বা মেজর রাম বলতেন। এর সাথে তিনি দাবি করতেন যে, তিনি জম্মু ও কাশ্মীরে পোস্ট আছেন। তার কাছ থেকে ১২ টি সেনা ইউনিফর্ম, ২৬ টি নতুন জুতা, দুটি মোটরসাইকেল, দুটি চার চাকার গাড়ি, একটি ট্রাঙ্ক, সেল ফোন, রাবার স্ট্যাম্পসহ অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন যে ২০১৭ সাল থেকে পুলিশ যোগেশকে খুঁজছিল।
পুলিশ জানিয়েছেন, যোগেশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর রাবার স্ট্যাম্প এবং লেটারহেড তৈরি করেছিলেন এবং তিনি সেনাতে যোগদানের নকল চিঠি দিয়ে যুবকদের ঠকাতেন। এখন অবধি তিনি প্রায় ২২ টি ভুয়া যোগদানের চিঠি প্রস্তুত করেছেন এবং লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছেন।
No comments