ইতিহাসে এই প্রথম গ্রিনল্যান্ডে বৃষ্টি হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং দুর্যোগে এটি একটি উদ্বেগজনক মাইলফলক । বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন যে তারা কয়েক ঘন্টা ধরে এমন অবিচ্ছিন্ন বৃষ্টির অভিজ্ঞতা পাননি। যদিও ১০,৫৫১ ফুট উপরে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে, বিজ্ঞানীরা এই ঋতুকে অস্বাভাবিক বলে মনে করেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের মাত্রা বিশ্বকে ঋতু বৈচিত্র্য থেকে বঞ্চিত করছে। প্রকৃতি ধীরে ধীরে তার প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য হারাচ্ছে। বর্ষাকালে চরম খরা, বন্যা মৌসুমের আগে বন্যা, সারা পৃথিবীতে হারিকেন এবং অনির্দেশ্য ঝড়। জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিদিন নতুন গুরুতর চমক দিচ্ছে। গ্রিনল্যান্ডের বৃষ্টি জলবায়ু পরিবর্তনের আরেকটি বার্তা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের সামিট স্টেশন অনুসারে, ১৪ আগস্ট থেকে বৃষ্টি হচ্ছে যা মৌসুমের সবচেয়ে ভারী বৃষ্টিপাত। গ্রিনল্যান্ড জুড়ে বৃষ্টির মাধ্যমে মেঘ থেকে ৭০০ মিলিয়ন টন জল নেমে এসেছে।
বর্তমানে গ্রিনল্যান্ডে গ্রীষ্মকাল চলছে। এখানে বেশিরভাগ জায়গার তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকে। এই সময়ে গ্রিনল্যান্ডের বেশিরভাগ অংশে সাধারণত তুষার গলে যায়। বৃষ্টির কারণে এবার জলের পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে গেছে।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, মানুষের কার্বন নিঃসরণ প্রতিদিন পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করছে এবং সেই বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবীর অনেক অংশে বরফ আগের চেয়ে দ্রুত গলে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রিনল্যান্ডের বরফ এখন সংকটজনক অবস্থায় রয়েছে। যদি বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে, তাহলে বরফ পুরোপুরি গলে যেতে বেশি সময় লাগবে না। সমুদ্রপৃষ্ঠ ইতিমধ্যে ২০ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
গ্রিনল্যান্ডের সমস্ত বরফ গলে গেলে পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠ ৬ মিটার বেড়ে যাবে। গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলে যেতে এখনও শত শত বছর সময় লাগবে। কিন্তু ১৯৯৪ সাল থেকে কোটি কোটি টন বরফ গ্রিনল্যান্ডে গলে গেছে। যা ক্রমাগত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উপরে উঠছে। বিশ্বের উপকূলীয় অঞ্চলের সমুদ্রের নিচে যাওয়ার বিপদ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
No comments