রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় গ্রেফতার করা হল মেদিনীপুর গুলি-কাণ্ডের ‘মূল অভিযুক্ত’ কুখ্যাত অপরাধী মোটা রাজা ওরফে সুমন সিং-কে। ঘটনার মাত্র ২ ঘন্টার মধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর শহরে ঢোকার মুখ থেকেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। মেদিনীপুর শহরের মহতাবপুরে গুলি চালিয়ে মোটা রাজা তার বুলেট বাইক নিয়ে ডেবরার দিকে পালিয়ে যাচ্ছিল। অ্যালার্ট করা হয় প্রতিটি থানার নাকা চেকিং পয়েন্টগুলিকে।
এরপরই, উল্টো দিক থেকে ডেবরা থানার পুলিশ তাকে তাড়া করে। খড়গপুরের এসডিপিও দীপক সরকারের নেতৃত্বে খড়গপুর এলাকা থেকেও তার পিছু ধাওয়া করা হয়। বুঝতে পেরেই মেদিনীপুর শহরের দিকে পিছু হটতে শুরু করে রাজা। প্রস্তুত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অম্লান কুসুম ঘোষের নেতৃত্বে কোতোয়ালী থানার পুলিশ। মেদিনীপুর শহরে ঢোকার মুখেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
একটি নাইন এমএম পিস্তল এবং ৩ রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয় মোটা রাজা’র কাছ থেকে। রবিবার তাকে আদালতে তোলা হয়েছে। পুলিশ ১৪ দিনের হেফাজতে (রিমান্ডে) নেওয়ার আবেদন জানাবে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার। তিনি এও জানিয়েছেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, খড়গপুরের এসডিপিও, ডেবরা ও কোতোয়ালী থানার আইসি সহ পুরো টিমের জন্য ৫০ হাজার পুরস্কার ঘোষণা করা হচ্ছে জেলা পুলিশের তরফে। রাজার বাকি সঙ্গীদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছেন এস পি।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাত আটটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যে মেদিনীপুর শহরে চলেছিল ৩ রাউন্ড গুলি। ধর্মায় একটি হোটেলে ২ রাউন্ড এবং মাহতাবপুরের পদ্মাবতী শ্মশান ঘাটের সামনে ১ রাউন্ড। ঘটনার মাত্র ২ ঘন্টার মধ্যেই অভিযুক্ত দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। গতকাল রাত ১১ টা নাগাদ এই খবর জানিয়েছিলেন জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার। তবে, কিভাবে তাকে পাকড়াও করা হয়, তা রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি জানালেন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ এর গুলি কান্ডের মূল অভিযুক্ত মোটা রাজা ওরফে সুমন সিং। ওই ঘটনায় রাজা মজুমদার নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। সম্প্রতি, জামিনে পেয়েছিল সুমন সিং (মোটা রাজা)। কিন্তু, জামিনের প্রধান শর্ত ছিল মেদিনীপুর শহরে ঢোকা যাবে না, এমনটাই জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার। তা সত্ত্বেও শুধুমাত্র আতঙ্ক ও ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য মেদিনীপুর শহরে প্রবেশ করেছিল মোটা রাজা।
আদালতে রবিবার এই তথ্যও তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার। তিনি এও আবেদন করেছেন, শনিবারের ঘটনায় ধর্মার সুমন্ত হোটেল এবং অন্য কেউ যদি থাকেন, তারা যেন থানায় অভিযোগ জানান। “ভয় পাওয়ার দরকার নেই”, আশ্বস্ত করেছেন পুলিশ সুপার।
No comments