স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকারা যখন একে অপরের সঙ্গে নতুন সম্পর্কে জড়ান, তখন সময় কীভাবে কেটে যায় তা জানা যায় না। প্রথম দিকে, দম্পতিরা একে অপরের সাথে অনেক কথা বলে, সময় কাটায়, কিন্তু যখন এই সম্পর্ক পুরানো হতে শুরু করে, তখন প্রায়ই দেখা যায় যে দম্পতিরা একে অপরের কাছে অভিযোগ করতে শুরু করে যে সে আর আগের মতো নেই। এর পিছনের কারণ হল সময়ের সাথে সাথে আমরা আমাদের সঙ্গীকে মঞ্জুর করতে শুরু করি। আমরা প্রায়ই কাজ বা অন্যান্য কারণে সঙ্গীকে সময় দিতে পারি না এবং এই কারণে উভয়ের মধ্যে যোগাযোগের অভাব হয়। যার কারণে ধীরে ধীরে সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব আসতে থাকে। এসব দূরত্ব কখন সম্পর্ক ভাঙার কারণ হয়ে দাঁড়ায় তা জানা যায় না। আপনিও যদি মনে করেন যে আপনার এবং আপনার সঙ্গীর মধ্যে ভালবাসা নেই বা সম্পর্কের উষ্ণতা কমে গেছে, তাহলে এই টিপসগুলি অবলম্বন করে আপনি আপনার সম্পর্কের মধ্যে একই নতুনত্ব এবং অ্যাডভেঞ্চার ফিরিয়ে আনতে পারেন এবং আপনার সম্পর্ককে ভাঙার হাত থেকে বাঁচাতে পারেন। তো চলুন জেনে নেই এই টিপসগুলো কি কি।
১) একসাথে কিছু সময় কাটান প্রতিটি সম্পর্কের ক্ষেত্রেই প্রথম মারামারি শুরু হয় যে আপনি সঙ্গীকে সময় দেন না, তাই আপনি যখন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তখনও আপনার সঙ্গীর জন্য কিছু সময় বের করতে হবে, যেখানে শুধুমাত্র আপনি দুজনেই একসঙ্গে থাকেন। এর জন্য আপনার কাজ ছেড়ে কোথাও লম্বা ছুটিতে যাওয়ার দরকার নেই, তবে আপনি আপনার সঙ্গীকে কোথাও লং ড্রাইভে নিয়ে যেতে পারেন। খুব বেশি নয়, আপনি মাত্র কয়েক দিনের জন্য ছুটি নিয়ে কাছাকাছি কোথাও একটি ভাল জায়গা বা পাহাড়ি স্টেশনে যাওয়ার পরিকল্পনা করতে পারেন যাতে আপনি দুজনেই একে অপরের সাথে কিছু সময় কাটাতে পারেন। এ কারণে আপনার সম্পর্কের মধ্যে কোনো কমিউনিকেশন গ্যাপ থাকে না, যার কারণে ভুল বোঝাবুঝি যেমন বাড়ে না, তেমনি সম্পর্কের মধ্যে আগের মতোই থাকে নতুনত্ব ও সতেজতা।
২) আপনি আপনার সঙ্গীকে এই ছোট ছোট জিনিস দিয়ে খুশি করতে পারেন
প্রায়শই আমরা ছোট ছোট বিষয়গুলোকে খুব একটা গুরুত্ব দেই না, কিন্তু এই ছোট জিনিসগুলোই আপনার সম্পর্কের মধ্যে নতুনত্ব আনে এবং আপনার সম্পর্ককে মজবুত করে। ছেলে হোক বা মেয়ে, সবাই সঙ্গীর মুখ থেকে নিজের প্রশংসা শুনতে পছন্দ করে, তাই সম্পর্ক যতই পুরনো হোক না কেন, আপনার সঙ্গী যদি আপনার জন্য কিছু করে থাকেন, তবে মাঝে মাঝে তার প্রশংসা করতে ভুলবেন না। ভাল প্রশংসা করা, কখনও কখনও হালকা আলিঙ্গন। আপনি এবং আপনার সঙ্গী দুজনেরই যদি অফিস থেকে একটি দিন ছুটি থাকে, তবে আপনি নিজের হাতে তাদের জন্য বিশেষ কিছু তৈরি করতে পারেন। এই ছোট জিনিসগুলিই সত্যিকারের সুখ নিয়ে আসে এবং আপনার সম্পর্ক মজবুত থাকে।
৩) সারপ্রাইজ দিন
উপহার সকলেরই পছন্দ হয়, তাই আপনার সঙ্গীর জন্য শুধু বিশেষ কোনো অনুষ্ঠানেই উপহার দেবেন এমন নয়, এর পাশাপাশি আপনি আপনার সঙ্গীকে এমন সারপ্রাইজ গিফটও দিতে পারেন। আপনি উপহারের সাথে মাসে বা পনেরো দিনের মধ্যে একটি সারপ্রাইজ ডিনারের পরিকল্পনাও করতে পারেন। এটি আপনার সম্পর্কের মধ্যে নতুনত্ব এবং সতেজতা বজায় রাখে।
৪) সম্পর্কের ক্ষেত্রেও একটু জায়গা প্রয়োজন।
স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকাদের মধ্যে এমন সম্পর্ক থাকে যে, সবাই চায় তার সঙ্গীর ওপর তারই সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব থাকুক, কিন্তু অনেক সময় অতিরিক্ত সংযম সম্পর্ক ফাটলের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রত্যেক ব্যক্তির নিজস্ব বন্ধুর বৃত্ত থাকে এবং সে তাদের সাথেও কিছু সময় কাটাতে চায়, তাই দম্পতিদের একে অপরকে কিছুটা জায়গা দেওয়া উচিত। সীমার চেয়ে বেশি স্ট্রিং টেনে নিলে ভেঙ্গে যায়, একইভাবে যেকোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা, সব কিছুর প্রতি নজর রাখা, সর্বত্র নিজের কর্তৃত্ব দেখানোর কারণে সম্পর্ক ভাঙার আশঙ্কা থাকে। এমন পরিস্থিতিতে কথা না বলে তাদের ফোন বা অন্যান্য বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। আপনার সঙ্গীকে তাদের বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে দিন তাদের বন্ধুদের সাথে বন্ধুর মতো আচরণ করুন। এতে আপনার সম্পর্ক সবসময় মজবুত থাকে এবং সঙ্গীও আপনার কাছে তার মনের কথা খুলে বলতে পারে।
৫) হালকা কৌতুক
যখন সম্পর্ক তার প্রথম স্তর পেরিয়ে যায়, তখন ধীরে ধীরে মজা কমে যায় এবং দম্পতিরা তাদের নিজ নিজ কাজ ও দায়িত্বে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আপনার সম্পর্ককে তরতাজা রাখতে, আপনার সঙ্গীর সাথে মজা করাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি সবকিছু নিয়ে সিরিয়াস থাকেন, তবে আপনি জীবনে একঘেয়েমি অনুভব করেন, তাই আপনার সঙ্গীর সাথে হালকাভাবে ঠাট্টা করা উচিত। এটি আপনার সম্পর্কের মধ্যে আকর্ষণ বজায় রাখে।
No comments