ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে (NFHS) এর একটি রিপোর্ট অনুসারে, ভারতে 58.6% শিশু, 53.2% মেয়ে এবং 50.4% গর্ভবতী মহিলা রক্তাল্পতায় ভোগে। অ্যানিমিয়া হল এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তির রক্তের লোহিত কণিকার সংখ্যা বা হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়, যা তাদের রক্তের অক্সিজেন বহন করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। মহিলাদের জন্য সাধারণ হিমোগ্লোবিন 12 গ্রাম প্রতি ডেসিলিটার (g/dL) এবং পুরুষদের জন্য 13 গ্রাম/dL।
রক্তস্বল্পতার কারণে ক্লান্ত বোধ, শক্তির অভাব, অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন, শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা, মনোযোগ দিতে অসুবিধা, মাথা ঘোরা, ত্বক ফ্যাকাশে, পায়ে ক্র্যাম্প, আলসার, গ্যাস্ট্রাইটিস, অর্শ, মল রক্ত ইত্যাদি লক্ষণ রয়েছে। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
অল্পবয়সী মেয়েদের রক্তাল্পতার কারণ
অল্পবয়সী ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি বেশি। এর অনেক কারণ থাকতে পারে। প্রথমটি হল পিরিয়ডের সময় মেয়েরা প্রতি মাসে বেশি রক্ত হারায় এবং অনেক মেয়েই ছেলেদের তুলনায় কম লাল মাংস খায়। এ ছাড়া মেয়েদের খারাপ খাবার তাদের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলছে। আজকাল মেয়েরা কম আয়রন জাতীয় খাবার যেমন মাংস, ডিম, সিরিয়াল ইত্যাদি খাচ্ছে।
রক্তশূন্যতা এড়াতে এই জিনিসগুলো খান
আপনার খাদ্যতালিকায় আয়রনের মাত্রা বাড়ায় এমন জিনিসগুলি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যার মধ্যে রয়েছে মাংস (মুরগির মাংস এবং মাছ), সিরিয়াল (রুটি এবং পাস্তা), শুকনো ফল (এপ্রিকট, কিশমিশ ), সবুজ শাকসবজি (পালং শাক, কলার্ড গ্রিনস, কেল), পুরো শস্য (বাদামী চাল, গম , ব্রাউন মাফিন), মটরশুটি, মটর এবং বাদাম এবং ডিম।
1) টমেটো
টমেটো খেলে শরীরে রক্ত বাড়ে। টমেটো খেলে হজমশক্তি ভালো হয় এবং ত্বকেরও উন্নতি ঘটে। সালাদ আকারে টমেটো খাওয়া বেশি উপকারী। তবে মনে রাখবেন যাদের পাথর আছে তাদের টমেটো কম খাওয়া উচিত।
2) কিসমিস
কিশমিশ খাওয়া শরীরের জন্যও অনেক উপকারী। 40 গ্রাম কিশমিশ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন যতক্ষণ না তারা উষ্ণ হয়। এর পরে 250 মিলি দুধ যোগ করুন এবং এটি ফুটতে দিন। তারপর আপনি এই দুধ পান করুন এবং কিসমিস খান। এই কাজটি দিনে দুবার করুন। এতে আপনার শারীরিক ক্লান্তি ও দুর্বলতা দূর হবে।
3) পালং শাক
শরীরে রক্তের অভাব দূর করতে আপনার খাদ্যতালিকায় পালং শাক অন্তর্ভুক্ত করুন। কারণ শরীরে প্রথমে রক্তের প্রয়োজন হয় যাতে আপনার শরীর সুস্থ থাকে। পালং শাক আয়রনের ভান্ডার এবং এর রস নিয়মিত পান করলে রক্তস্বল্পতা ও মানসিক চাপ দূর হয় এবং ত্বকের উন্নতি ঘটে।
4) কলা
কলা তাৎক্ষণিক শক্তি দেয়। পটাশিয়ামের ভাণ্ডার কলা খেলে শরীরে শক্তি ও চর্বি উভয়ই বৃদ্ধি পায়। খাবার খাওয়ার পর দুটি কলা খান, যা আপনার শরীরে শুধু প্রাণই আনবে না, সাথে সাথে আপনার সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পাবে।
5) ডুমুর
দিনে এক কাপ ডুমুর খেলে শরীরে প্রায় ২৪০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এছাড়াও এতে ফাইবার, ভিটামিন কে এবং পটাশিয়াম পাওয়া যায়। প্রতিদিন খালি পেটে ডুমুর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, হজম সংক্রান্ত সমস্যাও দূর হয়।
6) আমলা
আমলায় রয়েছে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যার কারণে এটি পুরুষদের শরীরকে তরুণ রাখে, চুল সবসময় কালো রাখে এবং ত্বককে সবসময় টানটান রাখে। অতএব, প্রত্যেক মানুষকে সকালে একটি করে আমলকি বা জামও খেতে হবে।
No comments