সোজা এবং কোঁকড়া চুল দারুন দেখায়। বিশেষ করে যখন আপনি এটি খোলা রাখতে চান। তবে দূষণ ও দুর্বল জীবনযাত্রার কারণে তা করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। এই কারণেই বেশিরভাগ মহিলা রিবন্ডিং এবং কেরাটিনের মতো চুলের চিকিৎসার অবলম্বন করেন। এর মাধ্যমে প্রাকৃতিক উপায়ে কিছু সময় চুল সোজা রাখা যায়। এর সাথে চুল সিল্কি ও চকচকে দেখালেও ধীরে ধীরে এর প্রভাব কমে যায়। শুধু তাই নয়, এটি চুলের প্রাকৃতিক গঠনকেও প্রভাবিত করে, যার কারণে এটি ক্ষতিগ্রস্থ এবং প্রাণহীন দেখাতে শুরু করে।
এই রাসায়নিক সমৃদ্ধ জিনিসগুলি সোজা চুলের জন্য ব্যবহার করা উচিৎ নয়। কিছু প্রাকৃতিক জিনিস ব্যবহার করেও আপনি পেতে পারেন মসৃণ ও সোজা চুল। এই উপাদানগুলো কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই আপনার চুলকে নরম ও মসৃণ রাখতে দিন। এর পাশাপাশি এটি চুলকে দীর্ঘ সময় ধরে সুন্দর রাখতেও সহায়ক বলে প্রমাণিত হবে। তবে এর প্রভাব ধীরে ধীরে চুলে দেখা যাবে। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক এই প্রাকৃতিক পদ্ধতি সম্পর্কে
কলা এবং মেথি বীজের ব্যবহার
কলা এবং মেথি উভয়ই হেয়ার প্যাক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। তবে, আপনি যদি স্থায়ী এবং সোজা চুল চান, তাহলে সপ্তাহে দুইবার এই পেস্টটি চুলে লাগান। এর জন্য ভেজানো মেথি ও কলা দুটোই একসঙ্গে পিষে চুলে লাগান। ৪৫ মিনিট পর চুল ধুয়ে ফেলুন। আপনি চাইলে এতে মধুও মেশাতে পারেন। উভয় পুষ্টি উপাদানই চুলে জাদুর মতো কাজ করে।
শুকনো চুল এভাবে সোজা করুন
ঘরে এমন অনেক উপাদান রয়েছে, যা চুলে ব্যবহার করলে সঙ্গে সঙ্গে ইতিবাচক প্রভাব দেখতে পাবেন। আমরা রান্না করা ভাতের কথা বলছি, যা থেকে বিভিন্ন ধরনের হেয়ার প্যাক তৈরি করা হয়। সোজা চুলের জন্য একটি পাত্রে রান্না করা ভাত নিন এবং তাতে ২ চামচ অ্যালোভেরা জেল ও নারকেল দুধ মিশিয়ে নিন। অ্যালোভেরা জেলের জন্য তাজা পাতা ব্যবহার করুন। এবার সবশেষে এক চামচ মধু মিশিয়ে নিন। এবার এই সব উপকরণ একটি মিক্সারে নিয়ে পেস্ট তৈরি করে চুলে লাগান। ১ ঘণ্টা পর আপনার পছন্দের শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুবার এই পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখুন।
গরম তেল থেরাপি চেষ্টা করুন
হট অয়েল থেরাপি চুলের জন্য খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। এটি শুধুমাত্র ক্ষতিগ্রস্থ চুল মেরামত করে না বরং তাদের সোজা করে। এর জন্য আপনি একটি পাত্রে ৩ চামচ নারকেল তেল নিন এবং এতে দেড় চামচ ক্যাস্টর অয়েল মেশান। উভয় মিশ্রিত করুন, এটি সামান্য গরম করুন এবং তারপর আপনার মাথার ত্বকে লাগান। এটি দিয়ে মাথার ত্বকে ২০ মিনিটের জন্য ভালভাবে ম্যাসাজ করুন। এটি চুলের উপরের স্তর এবং নীচের অংশেও লাগান। ২ ঘণ্টা পর ভেষজ শ্যাম্পুর সাহায্যে চুল ধুয়ে ফেলুন। একটানা ২ মাস এই রুটিন মেনে চললে আপনি আপনার চুলে অন্যরকম আভা দেখতে পাবেন।
চুলে ডিমের সাদা ব্যবহার
মহিলারা প্রায়শই চুলের প্যাকে ডিম ব্যবহার করেন তবে সোজা চুলে এটি প্রয়োগ করার পদ্ধতিটি একটু আলাদা। এ জন্য চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী ডিমের সাদা অংশ বের করে মাথার ত্বকে লাগান। কয়েক মিনিট ম্যাসাজ করার পর চুলের নিচের অংশেও লাগান। এখন এটি প্রায় ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন এবং তারপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। মনে রাখবেন ডিম চুলে পুষ্টি জোগায় এবং সিল্কি ও চকচকে করে তোলে।
চুলের রুটিন অনুসরণ করার সময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে
চুল সোজা রাখতে ছোট ছোট কিছু বিষয়ের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি। এই কারণে তারা স্বাভাবিকভাবেই সোজা থাকে। যেমন চিরুনি করার উপায়। ভেজা চুল আঁচড়ানো উচিৎ নয়, এটা সবারই জানা, কিন্তু জট পড়া চুলকে কীভাবে আঁচড়ানো যায় তাও জানা উচিৎ। যতটা সম্ভব আলতো করে চুল আঁচড়ানোর চেষ্টা করুন।
চিরুনি দেওয়ার আগে একবার আপনার চিরুনি পরিষ্কার করতে ভুলবেন না। এছাড়া খোলা বাতাসে ভেজা চুল শুকাতে হবে। স্টাইলিং টুল বা ব্লো ড্রায়ারের মতো জিনিস ব্যবহার করবেন না।
চুল ধোয়ার পর শক্ত তোয়ালে না দিয়ে তুলো ও নরম কাপড়ে চুল মুড়ে নিন। এছাড়াও এগুলিকে ঢিলেঢালাভাবে মোড়ানো, এগুলিকে শক্ত করা তাদের দুর্বল এবং শুষ্ক করে তুলতে পারে।
No comments