যাঁরা স্বাস্থ্যসচেতন, তাঁরা আজকাল আলু দেখলেই বড্ড নাক সিঁটকে ওঠেন! যেন এই একটি সবজি খেলেই সুস্থ থাকাটা জলাঞ্জলি দিতে হবে। কিন্তু সত্যিই কি আলু আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব বিপজ্জনক? আলু পোস্ত, আলুভাতে, ডালের সঙ্গে ঝুরঝুরে আলুভাজা বা বিরিয়ানির আলুর টুকরোটি তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করলে কি আপনার ব্লাড সুগারের মাত্রা সত্যিই বেড়ে যাবে? পেটের চারপাশে জমবে বাড়তি মেদের স্তর?
ডায়েটিশিয়ানদের বক্তব্য হচ্ছে, ১০০ গ্রাম আলু থেকে মেলে কম-বেশি ১০০ ক্যালোরি। এর মধ্যে অস্বাস্থ্যকর কিছু নেই। আলু সেদ্ধ করে, পুড়িয়ে (আজকাল তো আর উনুন নেই, পোড়ানোও সম্ভব নয় – তবে বেক করে খাওয়া যায় নিঃসন্দেহে), তেলে সাঁতলে পোস্ত দিয়ে রেঁধে এমনকী ডালের সঙ্গে ভাজা খেলেও কোনও সমস্যা হওয়ার কথা না। সমস্যা হয় আপনি একটার পর একটা প্যাকেট ভরা চিপস উড়িয়ে দিলে। অথবা বাজারের ফাস্ট ফুড সেন্টারের হাইড্রোজেনেটেড তেলে ভাজা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই নিয়মিত খেতে আরম্ভ করলে। তখন আলুর সঙ্গে সঙ্গে অনেকটা তেলও ঢোকে শরীরে আর বলাই বাহুল্য যে তার মধ্যে পুষ্টিগুণ বিন্দুমাত্র থাকে না। জানেন কি, আলুর মধ্যে কোলেস্টেরলও থাকে না? তবে খারাপ তেলে যেহেতু ভাজা হয়, তাই প্যাকেটবন্দি আলু চিপস নিয়মিত খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে।
একথা অনেকেই বলেন যে আলুর কার্বোহাইড্রেট বা শ্বেতসার প্রকৃতিগতভাবে সরল (সিম্পল)। তাই রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় চট করে। কিন্তু এ কথাও ভেবে দেখবেন যে আমরা খুব কম সময়েই শুধু আলু খাই – তার সঙ্গে নিশ্চিতভাবেই ডাল, তরকারি, বা কোনও না কোনও প্রোটিন থাকে। তাই বিরিয়ানি বা মাংসের ঝোলের আলুর টুকরোটি থেকে নিজেকে বঞ্চিত করার কোনও মানেই হয় না! ডায়েটিশিয়ান ও চিকিৎসকরাও বলেন যে সরল কার্বোহাইড্রেট পুরোপুরি বাদ দেওয়াটাও বোকামি – তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে অন্যান্য খাবার খান। আপনার খাদ্যতালিকা সুষম হওয়া জরুরি, তা থেকে যেন শরীর পূর্ণ পুষ্টিগুণ পায় তা দেখবেন। আলুকে ভিলেন ভাবাটা কোনও কাজের কথা নয়, তা অন্য সবজিরই সমতুল। তবে তার প্রতি অতিরিক্ত পক্ষপাত রাখারও দরকার নেই।
No comments