একেবারে ফ্ল্যাট, নির্মেদ পেট-কোমরের মালিক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন না, এমন কোনও মহিলা আছেন নাকি? কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, চাইলেই পৃথিবীর সব ভালো জিনিস আমাদের হাতর নাগালে আসে না – তার জন্য দস্তুরমতো পরিশ্রম করতে হয় এবং লেগে থাকতে হয় ধৈর্য ধরে। মনে রাখবেন, মেয়েরা যেহেতু সন্তানধারণ করেন এবং পরিবারের নানা ঝক্কি সামলানোর মাঝে তাঁদের খাওয়াদাওয়ার সময়টাও সেই অর্থে নির্ধারিত নয়, তাই আমাদের শরীর এমনিতেই খানিকটা ফ্যাট জমিয়ে রাখার চেষ্টা করে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কাজে লাগানোর জন্য। আর সেটা পেটের চারপাশেই জমে সবচেয়ে সহজে, চট করে যেতেও চায় না। যাঁরা ভাবেন স্রেফ অজস্র সিটআপ করলেই পেট নির্মেদ হয়ে উঠবে, তাঁরা প্রকৃতপক্ষে মূর্খের স্বর্গে বসবাস করছেন। সিট আপ মোটেই আপনার সমস্যার সমাধান নয়, বরং অনেক বুদ্ধি করে এগোলে তবেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবেন।
প্রথমত, ডায়েটের প্রতি যত্নশীল হোন। যখন ইচ্ছে, যা ইচ্ছে তাই খেলে মোটেই পেটের ফ্যাট কমবে না। সুষম ও পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজন। কোনও ফুড গ্রুপ বাদ দিলেই চলবে না। সুস্থ থাকার জন্য আপনার শরীরের কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাটও দরকার হয়। তবে তার পরিমাণ কতটা হবে, তা আপনার দৈনিক অ্যাক্টিভিটির উপর নির্ভরশীল। ময়দার মতো সিম্পল কার্বোহাইড্রেট এড়িয়ে চলুন। ফলের কার্বোহাইড্রেট ভাঙতে শরীরের সময় লাগে বেশি, তাই যে কোনও ফল চলবে। রান্নায় একগাদা তেল চলবে না, চলবে না চর্বিযুক্ত মাছ বা মাংস। কিন্তু সামান্য পরিমাণে ঘি বা মাখন চলতে পারে, কারণ তা ভালো মানের ফ্যাট। চলবে বাদাম, কুমড়োর বীজ, সূর্যমুখির বীজ, তিসি, তিল ইত্যাদি।
দ্বিতীয়ত, মনে রাখবেন, মালাইকা আরোরার মতো নির্মেদ পেটের মালকিন আপনিও, কেবল তা চর্বির আড়ালে লুকিয়ে আছে। সেই বাড়তি মেদ কাটাতে চাইলে আপনাকে ব্যায়ামের দ্বারস্থ হতেই হবে। সবচেয়ে কাজে দেয় ওয়েট ট্রেনিং। তার কারণ ওয়েট ট্রেনিং আপনার পেশির শক্তি বাড়ায় আর সুগঠিত পেশি বাড়ায় ক্যালোরি খরচের হার। তাই ট্রেনারের পরামর্শ নিয়ে ওয়েট ট্রেনিং শুরু করুন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।
তিন নম্বর, পেটের মেদ কমানোর জন্য কিন্তু সিট আপ তেমন কার্যকর ব্যায়াম নয়। তার চেয়ে অনেক বেশি কাজের কোর মাসলের শক্তিবর্ধক ব্যায়াম, যেমন প্ল্যাঙ্ক, সাইড প্ল্যাঙ্ক, হাই প্ল্যাঙ্ক (ছবিতে মালাইকা যে মুদ্রায় আছে, তার পোশাকি নাম হাই সাইড প্ল্যাঙ্ক)। সেই সঙ্গে ক্রাঞ্চেস, রাশিয়ান টুইস্ট, বলসহ টুইস্ট ইত্যাদিও অভ্যেস করতে পারেন। যে কোনও কিছু ট্রাই করার আগেই ট্রেনারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সব ব্যায়ামেরই সহজ, মাঝারি ও কঠিন এই তিনটি ফরম্যাট থাকে। শুরুটা একেবারে সহজ দিয়ে করাই ভালো। বলে রাখা যাক, শুরুর দিকে প্ল্যাঙ্ক করতে কিন্তু অসুবিধে হবে। কিন্তু হাল ছাড়বেন না, লড়াই চালিয়ে যান। কিছুদিনের মধ্যেই সুফলটা স্পষ্ট বুঝতে পারবেন।
No comments