বাণীব্রত দত্ত , আগৱতলা
ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন ১৬ ফেব্রুয়ারি। তার আগে সেখানে রাজনৈতিক জোট নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। এখনও কোনও দল সেখানে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেনি। ফেব্রুয়ারির ১৬ তারিখ ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেখানে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কংগ্রেসের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি প্রদ্যোত মানিক্য দেববর্মণের প্রস্তাব মতো বিজেপির জোট সঙ্গী আইপিএফটি এববং তিপ্রা মোথার সংযুক্তির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
শনিবার রাতে গুয়াহাটিতে বৈঠক
সূত্রের খবর অনুযায়ী, শনিবার রাতে গুয়াহাটির একটি হোটেলে আইপিএফটি এবং তিপ্রামোথার মধ্যে একটি বৈঠক হয়। তিপ্রামোথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত মানিক্য দেববর্মণ জানিয়েছেন, তারা দুদলের সংযুক্তিকরণের জন্য আলোচনা শুরু করেছেন। সেখানে অভিন্ন পতাকা এবং প্রতীকের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বলে সূত্রের খবর। দুদলের সিনিয়র নেতারা এব্যাপারে আলোচনা শুরু করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
আইপিএফটির অবস্থান
আইপিএফটির প্রধান প্রেমকুমার রিয়াং সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ২০১৮ সাল থেকে ত্রিপুরায় তাদের সঙ্গে বিজেপির জোট রয়েছে। তারা একসঙ্গে লড়াই করেছেন এবং জিতেছেন। তবে আলাদা রাজ্যের দাবি পূরণ হয়নি। অন্যদিকে আলাদা তিপ্রাল্যান্ডের জন্য লড়াই করলেও কিছুই অর্জন করা যায়নি। ২০০৯ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া তারা কিছুই পাননি বলে জানিয়েছেন ওই নেতা। উপজাতিদের জন্য স্বশাসিত পরিষদের নির্বাচনে সাফল্যের পরে তিপ্রামোথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত মানিক্য দেববর্মণ বিজেপির জোটসঙ্গী ইন্ডিজেনাস পিপলস ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা অর্থাৎ আইপিএফটিকে তাদের দলের সঙ্গে সংযুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
বিজেপির পক্ষে কঠিন হতে পারে নির্বাচন
যদি আইপিএফটি এবং তিপ্রামোথার জোট হয়, তাহলে এবারে ত্রিপুরায় বিধানয়ভা নির্বাচন বিজেপির পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে। রাজ্যের ৬০ টি আসনের মধ্যে ২০ টি আসন উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত। দুইদলের একীভূত হলে কিংবা জোট করলে এই কুড়িটি আসন ছাড়াও আরও ৫-৭ টি আসনে তারা নির্নায়ক ভূমিকা নেবে বলেও ধারনা সেখানকার রাজনৈতিক মহলের।
তবে এই দুই দল বলেছেন, তারা ত্রিপুরার উপজাতিদের জন্য আলাদা রাজ্যের আশ্বাস দিলে বাম-কংগ্রেস কিংবা বিজেপির সঙ্গে জোটে সামিল হতে পারে।
সাংবিধানিক সমাধানের দাবি
তিপ্রামোথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত মানিক্য দেববর্মণ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, গত ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে রাজ্যের উপজাতিরা ভুগছেন। সেই কারণে এবার লিখিলভাবে সাংবিধানিক সমাধানের দাবি করছেন তাঁরা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত, কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট নয়। কারণ তারা উপজাতি জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবেন না। তিনি অভিযোগ করেছেন, আগে অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচনের আগে মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনের পরে সেইসব রাজনৈতিক দল তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে। সেই কারণেই এবার তারা লিখিত প্রতিশ্রুতির দাবি করেছেন।
No comments