আবহাওয়ার পরিবর্তন শিশুদের সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। শীতকালেও শিশুদের ঠাণ্ডা ও ভাইরাল জ্বরের ঝুঁকি থাকে। শিশুদের সর্দি-কাশির সমস্যা হলে অভিভাবকদের খাবারের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। অভিভাবকদের প্রশ্ন ঠাণ্ডা-সর্দির সময় সন্তানদের কী খাওয়াবেন? খাবারের গোলযোগের কারণে অনেক সময় বাচ্চাদের সর্দি-কাশির সমস্যা বেড়ে যায়। এই সময়ে আপনার শিশুরও খাবার খেতে ইচ্ছে হতে পারে। কিন্তু খাবারের যত্ন না নিলে শিশুদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খারাপ হয়ে যায়। শিশুদের সর্দি-কাশির সমস্যা থাকলে তাদের এমন কিছু খাবার দিতে পারেন, যার ফলে তারা এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে, সেই সঙ্গে তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শক্তিশালী হবে। আসুন জেনে নিই শীতে শিশুদের কী খাওয়ানো উচিৎ?
সর্দি-কাশির সময় শিশুদের জন্য সেরা খাবার
সর্দি-কাশির সমস্যা শিশুদের মধ্যে দেখা যায়। এর কারণ হতে পারে আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং শিশুদের শরীরের দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। বাচ্চাদের সর্দি-কাশি হলে খাবারের যত্ন নিলে আপনি তাদের মারাত্মক সমস্যা থেকে বাঁচাতে পারেন। ঠাণ্ডা-সর্দি হলে শিশুদের এমন খাবার দিতে হবে, যাতে তাদের মধ্যে এই সমস্যা না বাড়ে এবং এর ফলে তাদের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব না পড়ে। বাচ্চাদের সর্দি হলে এই খাবারগুলো খাওয়া খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়।
1. চালের জল
শিশুদের কাশি বা সর্দি হলে ভাতের জল বা মাড় খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। এটি অনেক লোক ঘরোয়া প্রতিকার হিসাবেও ব্যবহার করে। ঠাণ্ডা-সর্দিতে ভাতের জল খাওয়া শুধু শিশুদের জন্যই নয়, বয়স্কদের জন্যও উপকারী। এর সেবনে শিশুদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং একই সঙ্গে শিশুদের শরীরের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। সর্দি-কাশির সমস্যা হলে বাচ্চাদের ভাতের জল দিলে উপকার পাওয়া যায়। ছয় মাসের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য ভাতের জল নিরাপদ বলে মনে করা হয়।
2. মুগ ডাল খিচড়ি
মুগ ডালের খিচুড়ি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। শীতের ঠান্ডায় শিশুদের মুগ ডালের খিচুড়ি খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায় এবং শিশুর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। মুগ ডালে রয়েছে শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী অনেক পুষ্টি উপাদান, যার সেবন খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। খেতেও সুস্বাদু।
3. বার্লি জল
ঠাণ্ডা-সর্দির ক্ষেত্রে বাচ্চাদের বার্লি জল দেওয়া খুবই উপকারী। শরীরের জন্য উপকারী এমন অনেক পুষ্টি উপাদান বার্লিতে পাওয়া যায়, যার কারণে আপনার শরীর সুস্থ থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ করে। জ্বর, সর্দি-কাশির সমস্যায় শিশুদের বার্লি জল খাওয়ানো খুবই উপকারী ও কার্যকর বলে বিবেচিত হয়। ছয় মাসের বেশি বয়সী বাচ্চাদের যবের জল খাওয়া উচিত, তা ছাড়া বাচ্চাদের বার্লি জল দেওয়ার সময় মনে রাখবেন যে তাদের গ্লুটেন অ্যালার্জির সমস্যা নেই।
4. টমেটো স্যুপ
সর্দি-কাশির সমস্যায় টমেটোর স্যুপ খাওয়া শুধু শিশুদের জন্যই নয়, বড়দের জন্যও উপকারী বলে মনে করা হয়। শিশুদের ঠান্ডা লাগার সমস্যা হলে টমেটোর স্যুপ খুবই উপকারী এবং এটি ওষুধ হিসেবে কাজ করে। টমেটোর স্যুপ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও কাজ করে। কিন্তু মনে রাখবেন যে টমেটো স্যুপ খাওয়া শুধুমাত্র 1 বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য নিরাপদ বলে মনে করা হয়। শিশুদের টমেটো স্যুপ খাওয়ানোর আগে অনুগ্রহ করে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
5. বাদাম দুধ
শিশুদের জ্বর, সর্দি, সর্দি-কাশির সমস্যায় বাদামের দুধ খুবই উপকারী। বাদাম একটি উষ্ণতা প্রভাব আছে এবং শিশুদের জন্য একটি উপকারী বাদাম হিসাবে বিবেচিত হয়। বাচ্চাদের সর্দি হলে বাদামের দুধ দিলে উপকার পাওয়া যায়। এর ফলে শিশুরা পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় এবং তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
6. সবজি স্যুপ
সবুজ সবজির স্যুপ শিশুদের ঠান্ডা লাগার সমস্যা দূর করতে কাজ করে। শিশুদের টমেটো, পালং শাক, গাজর এবং অন্যান্য সবজি দিয়ে তৈরি স্যুপ খাওয়াতে হবে। আপনি এতে কিছু গরম মশলা যেমন কালো মরিচ এবং দারুচিনি যোগ করতে পারেন। শিশুদের ঠাণ্ডা-সর্দি দূর করার পাশাপাশি তাদের শরীর গরম রাখতেও কাজ করবে।
শিশুদের সর্দি-কাশির সমস্যা হলে উপরে উল্লিখিত খাবারগুলো খুবই কার্যকর ও উপকারী বলে মনে করা হয়। পিতামাতারা প্রায়শই চিন্তিত থাকেন যে তাদের বাচ্চাদের সর্দি লাগলে কী খাওয়াবেন। কিন্তু এখন আপনি সঠিক উত্তর পেয়েছেন। 1 বছরের কম বয়সী শিশুদের এই জিনিসগুলি খাওয়ানোর আগে একবার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
No comments