চুলের যত্ন নিয়ে ৬টি প্রশ্নের উত্তর জেনে নিন
বিনোদন ডেস্ক, ২১ এপ্রিল : শীতের মৌসুম শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ তাদের খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি ত্বকের যত্ন ও চুলের যত্নের রুটিনে পরিবর্তন আনতে শুরু করেছে। শীতকালে কম তাপমাত্রা, আর্দ্রতার কারণে ত্বক ও চুল শুষ্ক, প্রাণহীন হয়ে পড়ে। আজ আমরা আপনাদের জানাবো শীতে শীতকালে চুলের যত্ন কিভাবে করবেন। শীতকালে মানুষের মনে চুল সংক্রান্ত নানা প্রশ্ন থাকে, উত্তর জানতে কথা হয় কসমেটোলজিস্ট ও নান্দনিক ওষুধের চিকিৎসক রুচি শর্মার সঙ্গে-
শীতের মৌসুমে যদি আপনার চুলও নষ্ট হতে শুরু করে, তাহলে এর জন্য আপনি অবশ্যই অনেক ধরনের চুলের যত্নের পণ্য ব্যবহার করছেন। চুলকে মজবুত, নরম ও সুন্দর করতে হলে এগুলোর যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি। শীতে চুলের যত্ন সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর জেনে নিন-
প্রশ্ন 1: শীতকালে চুল কেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়?
শীতকাল শুধু ত্বকের জন্যই খারাপ নয় চুলের জন্যও। এই ঋতুতে কম আর্দ্রতা, তাপমাত্রার কারণে চুল শুষ্ক, প্রাণহীন এবং ঝরঝরে দেখাতে শুরু করে। শীতে শুষ্ক বাতাসে ত্বক যেমন শুষ্ক হয়ে যায়, তেমনি চুলও শুষ্ক হয়ে যায়। এই খুশকির কারণে চুলে চুলকানি শুরু হয়। এ কারণে শীতে চুল নষ্ট হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, এই ঋতুতেও চুল পড়ে। এটি এড়াতে যতটা সম্ভব চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখুন।
প্রশ্ন 2: শীতকালে চুলের যত্ন কিভাবে নেবেন?
চুলের সুরক্ষার জন্য শ্যাম্পুগুলিকে ছোট করুন, কারণ এতে সার্ফ্যাক্টেন্ট থাকে, যা চুল পরিষ্কার করে কিন্তু শুষ্ক করে। শ্যাম্পুর পরিবর্তে চুলে ময়েশ্চারাইজিং কন্ডিশনার, ক্লিনজিং কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন। নারকেল তেল চুলের জন্য উপকারী।
শ্যাম্পু কম এবং কন্ডিশনার বেশি ব্যবহার করুন।
চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে নারকেল তেল দিয়ে মাথার ত্বক, চুল ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন।
চুল ধোয়ার ১০ মিনিট আগে হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করুন। এতে চুল নরম, ঝলমলে ও সুন্দর হবে।
মাথার ত্বকের চুলকানি, খুশকি এবং জ্বালা দূর করতে সময়ে সময়ে চুল ধুয়ে নিন। মাথার ত্বকে চুলকানি এড়িয়ে চলুন।
প্রশ্ন 3: আমি কি শীতকালে প্রতিদিন আমার চুল ধুতে পারি?
অনেকের মনেই প্রশ্ন থাকে শীতে রোজ চুল ধোয়া উচিৎ নাকি? এ বিষয়ে ডাঃ রুচি শর্মা বলেন, গ্রীষ্মে তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে মানুষ প্রতিদিন চুল ধোয়। যেখানে শীতকালে এটি করার প্রয়োজন হয় না। প্রতিদিন চুল ধোয়া একটি ভাল চুলের যত্নের রুটিন নয়। আসলে চুলে প্রাকৃতিক তেল বা তেল থাকে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিদিন চুল ধুলে তা চুলের প্রাকৃতিক তেল দূর করে। এতে চুল শুষ্ক, শক্ত ও দুর্বল হয়ে যায়। শুধু শীতকালেই নয়, গরমেও ঘনঘন চুল ধোয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। শীতকালে সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার চুল ধুতে পারেন।
প্রশ্ন 4: শীতকালে চুলের জন্য কোন তেল উপকারী?
চুলের জন্য কোন তেল ভালো? চুলে ম্যাসাজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি চুলকে মজবুত, নরম ও চকচকে করে। চুলকে নিরাপদ ও সুন্দর রাখতে অবশ্যই তেল ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষের মনেই একটা প্রশ্ন থাকে যে, শীতে চুলে কোন তেল মালিশ করা উচিত? এ বিষয়ে ডাঃ রুচি শর্মা বলেন, আর্গান অয়েল, অ্যাভোকাডো অয়েল, নারকেল তেল, তিসির তেল এবং অলিভ অয়েল চুলের জন্য খুবই উপকারী। এর ফলে চুল মজবুত হয় এবং শীতকালেও চুল শুষ্ক হয় না।
প্রশ্ন 5: শীতকালে কীভাবে চুল নরম এবং হাইড্রেটেড করা যায়?
নরম, হাইড্রেটেড এবং চকচকে চুল সবাই পছন্দ করে। আমরা যেভাবে প্রচুর পানি পান করি এবং ত্বককে হাইড্রেট করতে ফেসপ্যাক ব্যবহার করি, ঠিক একইভাবে চুলকে হাইড্রেট করতেও পানি পান করা এবং হেয়ার প্যাক লাগাতে হয়। চুলে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি বজায় রাখলে চুল শুষ্ক, প্রাণহীন হওয়া থেকে রক্ষা পায়। এ জন্য চুলকে ময়েশ্চারাইজ করার পাশাপাশি হাইড্রেট করাও প্রয়োজন। এর জন্য অ্যাভোকাডো, নারকেল, জলপাই, বাদাম তেল ব্যবহার করতে পারেন। এর পাশাপাশি চুলকে নিয়মিত কন্ডিশন করুন। হাইড্রেটিং শ্যাম্পু ব্যবহার করেও চুল হাইড্রেট করা যায়। এছাড়াও চুল ধোয়ার পর সিরাম ব্যবহার করুন।
প্রশ্ন 6: কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে?
শীতকাল চুলের জন্য সঠিক বলে মনে করা হয় না, কারণ এই ঋতুতে চুল আরও শুষ্ক হয়ে যায় এবং চুল পড়া শুরু হয়। এর পাশাপাশি শরীরে কিছু পুষ্টি উপাদানের অভাবে চুল পড়ার সমস্যাও হয়। ভিটামিন বি৩, ভিটামিন ই, ভিটামিন ডি, ভিটামিন এ-এর অভাবে চুল পড়তে পারে। চুলকে নিরাপদ রাখতে এই সব ভিটামিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
No comments